মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫

আজকের কবিতা, বাঙালি, চিতিয়ে বুকের ছাতা

 


বাঙালি, চিতিয়ে বুকের ছাতা

স্মরজিৎ দত্ত


আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া

হাসির নেশায় মাতিতে জানি।

আমি প্রতিবাদের ঝড় তুলে

বুকের রক্তে লুটিতে জানি।


আমি প্রতিবাদের ঝড় তুলে

কখনো পালাতে শিখিনি।

পুলিশের বেওনট দেখে

পেছন ঘুরে লুকোতে শিখিনি।


বাংলা মায়ের রক্ত বুকে

বাংলার প্রাণেই বাঁচি।

বাংলা ভাষাকে বাঁচাতে গিয়ে

পুলিশের গুলিতেও জীবন দিতে জানি।


বাংলা যাদের মাতৃভাষা

যাদের হৃদয়ে বাংলার রক্ত।

সেই বাংলা ভাষা বাঁচাতে কেন

বাংলা ভাষাভাষীকেই দিতে হয় রক্ত।


সালটা তখন ১৯৬০

তারিখ ছিল ১৯শে মে।

অসম রাজ্যে অসমীয়া ভাষা

রাজ্য প্রশাসন রাজ্য স্বীকৃতি দেবে তাকে।


সেই রাজ্যের বাঙালিরা সব

বাঙালি, মুসলমান আরো ইত্যাদি যে।

তাদের সবার ভাষা বাংলা ভাষা

তাই প্রতিবাদ একসাথে।


বাংলা ভাষার স্বীকৃতিতে

তারা সবাই একসাথে।

প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল

জাদ বেজাত বিভাজন ভুলে।


১৮ই মে ১৯৬০

রাতেই হয়েছিল সমবেত।

শিলচর স্টেশনে

ওই অঞ্চলের ছেলেমেয়ে যত।


প্রশাসনও জানত সেদিন

এমন আন্দোলনের কথা।

তবুও তাদের হাত কাঁপেনি করতে গুলি,

গুলিতে ওই ছেলেমেয়েদের

ছেলেমেয়েদের ছিন্ন ভিন্ন করতে বুকের ছাতা।


সেদিন সারা ভারত দেখেছিল

বাঙালির বুকের ছাতা ।

কানাইলাল নিয়োগী, চণ্ডীচরণ সুত্রধর,

হিতেশ বিশ্বাস, সত্যেন্দ্র দেব,

কুমুদরঞ্জন দাস, সুনীল সরকার,

তরণী দেবনাথ, শচীন্দ্র চন্দ্র পাল,

বীরেন্দ্র সূত্রধর আর সুকমল পুরকায়স্থ তারা।

এমন নয়টি প্রাণ সেদিন

প্রশাসনের বন্দুকের নলের মুখে;

চিতিয়ে দিয়েছিল বুকের ছাতা।


বাঙালি সেদিন প্রাণের বিনিময়ে

ছিনিয়ে নিয়েছিল তাদের দাবিকে।

বাংলা ভাষার স্বীকৃতি চাই,

বাংলা মোদের মাতৃভাষা যে।


বছর ঘুরে আবার আজ

১৯শে মে তারিখে যে।

অসম রাজ্যের বারাক উপত্যকা

আজও বারাক আন্দোলন নামে ভূষিত সে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আড্ডার একাদশ

আজকের কবিতা, বাঙালি, চিতিয়ে বুকের ছাতা

  বাঙালি, চিতিয়ে বুকের ছাতা স্মরজিৎ দত্ত আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসির নেশায় মাতিতে জানি। আমি প্রতিবাদের ঝড় তুলে বুকের রক্তে লুটিতে জানি...